মুরগির রানীক্ষেত রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা

 

রানীক্ষেত রোগ

বাংলাদেশে পোল্ট্রি শিল্প একটি ক্রমবর্ধনশীল লাভজনক শিল্প। মুরগি পালনের সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা রোগ। বিভিন্ন রোগের কারণে এই পোল্ট্রি শিল্প মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পোল্ট্রির বিভিন্ন রোগ বালাইয়ের মধ্যে ভাইরাসজনিত রানীক্ষেত একটি 

মুরগির প্যারামিক্রো  ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ। এই রানিক্ষেত রোগ মুরগির খামারের সর্বাধিক ক্ষতি কর  রোগ গুলার মধ্য অন্যতম ।সমস্ত বয়সের মুরগি এই রোগে আক্রান্ত হয়। আমদের দেশে শীত ও বসন্ত কালে এই রোগের লক্ষণ বেশি দেখা যায় ।

রোগের লক্ষণ

হাঁচি, কাঁশি, শ্বাসকষ্ট, গলায় ঘড়ঘড় আওয়াজ এ রোগের প্রথম লক্ষণ।

শ্বাসযন্ত্র ও স্নায়ুতন্ত্র বিশেষভাবে আক্রান্ত হয়। শ্বাসযন্ত্র আক্রান্ত হওয়ায় শ্বাসকষ্ট হয়, ফলে হা করে শ্বাস টানে। স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হওয়ার পরবর্তি পর্যায়ে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাত দেখা দেয়।

সাদা চুনের মত পাতরা পায়খানা করে।

ঘাড়, ডানা ও পা অবশ হয়ে পড়ে।

কোন কোন রানীক্ষেত রোগে আক্রান্ত মুরগি অস্থির অবস্থায় পেছনের দিকে হেলে পড়ে বা চক্রাকারে ঘুরতে থাকে।

খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিয়ে আড়ালে গিয়ে মাথা একদিকে বাঁকিয়ে রেখে অথবা পিছন ফিরে ডানায় মাথা গুজেঁ রাখে।

উৎপাদন হঠাৎ কমে যায়।

চিকিৎসা ব্যবস্থা বা রোগ দমন

মুরগির রানীক্ষেত রোগের কোন চিকিৎসা নেই। রোগের প্রাদূর্ভাব হওয়ার সাথে সাথে মুরগি গুলোকে লাসোটা ভ্যাকসিন পানির সাথে খাওয়ারে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়। সতটা সম্ভব অসুস্থ মোরগ ও মুরগিগুলোকে আলাদা করে রাখতে হবে।

ঘরটিকে জীবাণুনাশক দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। খাবার পাত্র ও পানির পাত্র জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

চট্টগ্রাম সরকারী ভেটেরিনারী কলেজ এর একটি পরামর্শ এখানে উল্লেখ করার মত। জেন্টামাইসিন ৫% (ব্রেমমার ফার্মা কর্তৃক প্রস্তুত) ১ মিলি ঔষুধ ১৯ মিলি পরিশোধিত পানিতে মিশিয়ে ১ সিসি করে মুরগিকে ৩ দিন পর্যন্ত রানের মাংসে ইনজেকশন দিলেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।

রাণীক্ষেত রোগ নিয়ন্ত্রণ করার পদ্ধতি

খামারের সকল মুরগি ধ্বংস করে ফেলতে হবে।

জীবাণুনাশক দিয়ে খামার ও জিনিসপত্র পরিষ্কার করতে হবে।

মৃত মুরগি সঠিক নিয়মে পুঁতে ফেলতে হবে বা নষ্ট করে ফেলতে হবে।

খামার থেকে পোকামাকড় দমন করতে হবে।

মুরগির খামার থেকে সকল মুরগি সরিয়ে নতুন মুরগি আনতে কমপক্ষে ২১ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

মানুষের অনিয়ন্ত্রিত আনাগোনা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা

নিয়মিত মোরগ মুরগিকে রানীক্ষেত রোগের ভ্যাকসিন বা টিকা দিতে হবে। সময়মত টিকা প্রয়োগ করলে এ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কাছাকাছি এলাকায় রাণীক্ষেত রোগ দেখাদিলে প্রতিষেধক টিকা দানের ব্যবস্থা করতে হবে। সর্বদা খামারে উত্তম স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখতে হবে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.